চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এক অভূতপূর্ব ও জটিল বাণিজ্যযুদ্ধের সূচনা হয়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নেতৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। এ লক্ষ্য পূরণে তিনি পণ্যের ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, যা ১০ শতাংশ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত।
যদিও এসব শুল্ক ব্যবস্থা বিভিন্ন দেশের আমদানি পণ্যের জন্য প্রযোজ্য, তবে মূল লক্ষ্যবস্তু হিসেবে চীনকেই বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ ইতোমধ্যেই কার্যকর হয়েছে। অন্যদিকে, অন্যান্য দেশের জন্য নির্ধারিত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে।
এই অবস্থায় চীনও পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও উত্তপ্ত করে তোলে। এতে দু’দেশের মধ্যে একটি জটিল ও দীর্ঘমেয়াদী বাণিজ্য দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে।
বেইজিং এ পরিস্থিতি সামাল দিতে কৌশলগতভাবে কাজ করছে। তারা শুধু ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মোকাবিলা করেই থেমে নেই, বরং মার্কিন শুল্ক নীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সংযোগ জোরদারে মনোযোগী হয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া এবং কম্বোডিয়ায় রাষ্ট্রীয় সফরে যাচ্ছেন। এসব দেশও ট্রাম্পের ঘোষিত পাল্টা শুল্ক ব্যবস্থার আওতায় পড়েছে। ভিয়েতনামে তিনি থাকবেন ১৪ ও ১৫ এপ্রিল, এরপর মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়ায় ১৫ থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত সফর করবেন।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারাও ট্রাম্পের শুল্কনীতিকে কেন্দ্র করে বেইজিংয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে চাইছেন। কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ইউরোপীয় নেতারা আগামী জুলাই মাসে চীনে এক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে যাচ্ছেন।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত করতে চীনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করা হচ্ছে, জুলাইয়ের দ্বিতীয়ার্ধেই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ট্রাম্পের একতরফা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে “উৎপীড়নমূলক” হিসেবে উল্লেখ করেন এবং এই সিদ্ধান্ত প্রতিরোধে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।