Friday, April 18, 2025
spot_imgspot_img
Homeজাতীয়নববর্ষে চারুকলার শোভাযাত্রায় প্রতিবাদের মুখ

নববর্ষে চারুকলার শোভাযাত্রায় প্রতিবাদের মুখ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টার পর শুরু হয় বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবারের শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ছিল—‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।

শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়, টিএসসি, শহীদ মিনার এবং দোয়েল চত্বর ঘুরে পুনরায় চারুকলায় এসে শেষ হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও শোভাযাত্রায় ছিল নানা প্রতীকী মোটিফ, তবে এবারের আয়োজন ছিল ব্যতিক্রমী আবহে।

সবচেয়ে আলোচিত ছিল একটি বিশেষ মুখাকৃতি, যেটিকে ‘ফ্যাসিবাদের মুখ’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। অনেকেই একে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার প্রতীক হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। বাঁশ, কাঠ ও বেত দিয়ে নির্মিত মুখাকৃতিটি শোভাযাত্রার আগের দিন ভোরে পুড়িয়ে ফেলা হয়। তবে আয়োজকরা তড়িৎ গতিতে ককশিট দিয়ে এটি পুনরায় নির্মাণ করেন এবং প্রদর্শনের জন্য প্রস্তুত করেন।

আরেকটি দৃষ্টিনন্দন ও অর্থবহ মোটিফ ছিল একটি পানির বোতল—যা জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর স্মরণে তৈরি। বোতলে লেখা ছিল, “পানি লাগবে পানি”—যা দর্শনার্থীদের মধ্যে গভীর আলোড়ন সৃষ্টি করে।

এই আয়োজনে আরও দেখা যায় বাঘ, ইলিশ মাছ, পালকি ও শান্তির পায়রার প্রতীক। এবারে মোট সাতটি প্রধান মোটিফ শোভাযাত্রায় স্থান পায়।

শোভাযাত্রায় অংশ নেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা, সাধারণ দর্শনার্থী, দেশের বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের সদস্যসহ প্রায় ২৮টি গোষ্ঠীর মানুষ। কৃষক দল, রিকশা-শ্রমিক সংহতি এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি ঘোড়সওয়ার বাহিনীও এতে অংশ নেয়।

শুরুর দিকে ছিল আটটি ঘোড়ার একটি বাহিনী, যদিও এবার পুলিশের কোনো স্বতন্ত্র শোভাযাত্রা দল ছিল না।

শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা, সংস্কৃতির বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, নাগরিক সমাজ ও শিল্পীসমাজ। পুরো আয়োজনে রাজনৈতিক বার্তা এবং প্রতিবাদের স্বর ছিল স্পষ্ট, যা দর্শনার্থীদের মনে জোরালো প্রভাব ফেলেছে এবং ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments