Saturday, May 10, 2025
spot_imgspot_img
Homeজাতীয়বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক আরও জোরদারের প্রত্যয়ে ইউনান গভর্নরের প্রথম ঢাকা সফর

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক আরও জোরদারের প্রত্যয়ে ইউনান গভর্নরের প্রথম ঢাকা সফর

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে এসেছেন চীনের ইউনান প্রদেশের গভর্নর ওয়াং ইউবো। তাকে স্বাগত জানাতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “এটি কেবল সূচনা। আমরা ভৌগোলিকভাবে কাছাকাছি হলেও মনস্তাত্ত্বিকভাবে অনেক দূরে। এখন সময় এসেছে সেই দূরত্ব ঘোচানোর।”

সোমবার (২১ এপ্রিল) ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ওয়াং ইউবোর সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

বৈঠকে ড. ইউনূস গভর্নর ইউবোর আগমনকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমরা চাই আপনি বারবার বাংলাদেশে আসুন। আমরা শুধু ভালো প্রতিবেশী নয়, বরং ঘনিষ্ঠতম অংশীদার হতে আগ্রহী।”

চীনে তার সাম্প্রতিক সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, ওই সফর দুই দেশের সম্পর্কে এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। তিনি চীনের অতিথিপরায়ণতার প্রশংসা করেন এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বন্ধুত্বপূর্ণ মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান।

গভর্নর ওয়াং ইউবোও আন্তরিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “আমার এই সফরের মূল লক্ষ্য বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করা। দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রবেশদ্বার হিসেবে ইউনান প্রস্তুত রয়েছে।”

বৈঠকে উভয়পক্ষ তরুণদের মধ্যে বিনিময়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং বাণিজ্যসহ একাধিক খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করে।

গভর্নর ইউবো জানান, ইউনানের একটি ব্যাংক ইতোমধ্যে ড. ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ মডেলকে বাস্তবায়ন করেছে এবং সেটি ইতিবাচক ফল দিচ্ছে। তিনি সামাজিক উন্নয়নের অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে চীন ও বাংলাদেশের একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

তিনি আরও বলেন, পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন, ডিজিটাল ও ভাষা শিক্ষা এবং সামুদ্রিক খাদ্য, আম ও কৃষিপণ্য রপ্তানির মতো খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো সম্ভব।

“মানুষে-মানুষে সম্পর্ক বাড়াতে হবে, তবেই আমাদের অঞ্চলগুলো আরও কাছাকাছি আসবে,” বলেন ইউবো।

ড. ইউনূস গভর্নরের প্রস্তাবগুলোর প্রতি একমত পোষণ করে বলেন, “আপনি যেসব বিষয় বলেছেন—স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও বাণিজ্য—তাতে আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আমরা দ্রুত এগিয়ে যেতে প্রস্তুত।”

বৈঠকে স্বাস্থ্যখাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ড. ইউনূস কুনমিংয়ের চারটি হাসপাতালকে বাংলাদেশি রোগীদের জন্য নির্ধারণ এবং চিকিৎসা পর্যটনে সহায়তা দেওয়ার জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান।

শিক্ষাক্ষেত্রেও দুই দেশ অধিকতর সহযোগিতার অঙ্গীকার করে। বর্তমানে চীনে প্রায় ৪০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত, এবং এই সংখ্যা বহুগুণে বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন অধ্যাপক ইউনূস।

তিনি বলেন, “আমরা আমাদের তরুণদের চীনে পড়াশোনায় আগ্রহী করে তুলব, বিশেষ করে ভাষা শিক্ষায়।”

বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে উভয় দেশ নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও পারস্পরিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments