Thursday, April 24, 2025
spot_imgspot_img
Homeআন্তর্জাতিকআন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধের জালে ধরা পড়ছে এশিয়া, লক্ষ্য এবার আফ্রিকা ও ইউরোপ

আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধের জালে ধরা পড়ছে এশিয়া, লক্ষ্য এবার আফ্রিকা ও ইউরোপ

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, সাইবার স্ক্যাম বা ডিজিটাল প্রতারণা বিশ্বব্যাপী বড় ধরনের হুমকি হয়ে উঠছে। জাতিসংঘের এক সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এই স্ক্যামের ভয়াল ছায়া এবার আফ্রিকা ও ইউরোপের দিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) জাতিসংঘের প্রকাশিত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, এশিয়ায় গড়ে উঠেছে একটি বিলিয়ন ডলারের সাইবার অপরাধ সিন্ডিকেট, যারা অত্যন্ত সংগঠিতভাবে এই অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। পুরো এশিয়া জুড়ে তাদের সক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে, এবং তারা এখন আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকাতেও তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে।

বিশেষত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এই মুহূর্তে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র এই স্ক্যাম পরিচালনা করছে। তারা প্রধানত ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করে প্রতারণার ফাঁদ পেতে চলেছে। অনেক সময় এই চক্র প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করছে, যেখানে নারীদের ব্যবহার করা হচ্ছে প্রধান অস্ত্র হিসেবে।

জাতিসংঘের ড্রাগ ও অপরাধ বিষয়ক সংস্থা ইউএনওডিসি-এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কার্যকরী প্রতিনিধি বেনেডিক্ট হফম্যান জানিয়েছেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে এই অপরাধ কার্যক্রম মহামারির মতো বিস্তার লাভ করেছে। প্রশাসন মাঝেমধ্যে অভিযান চালালেও, পুরনো গ্যাং ধ্বংস হলে নতুন গ্যাং দ্রুত গড়ে উঠছে।

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে এই অপরাধ সবচেয়ে বেশি দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। সেখানকার গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ দুর্বল, যা এই গ্যাংগুলোকে সুবিধা দিচ্ছে। একইসঙ্গে, লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যেও এই অপরাধের রেশ পৌঁছে যাচ্ছে।

হফম্যান জানান, শুধুমাত্র ২০২৩ সালেই বিশ্বজুড়ে সাইবার প্রতারণায় প্রায় ৭.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে সাধারণ মানুষ। আমেরিকায় একাই ক্ষতির পরিমাণ ৫.৬ বিলিয়ন ডলার। জাতিসংঘ মনে করছে, এই বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন গঠন করা জরুরি।

চীনের বেজিং সম্প্রতি মিয়ানমারে একটি বড় অভিযান চালিয়ে কয়েকটি গ্যাংয়ের কার্যালয় থেকে প্রায় ৭,০০০ পাচার হওয়া কর্মীকে উদ্ধার করেছে, যাদের মধ্যে অন্তত ৫০টি দেশের নাগরিক রয়েছে। এরা বিভিন্ন পথে পাচার হয়ে মিয়ানমারে গিয়ে এই অপরাধে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য হয়েছে।

এদিকে, ক্যাম্বোডিয়াতেও সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক অভিযান পরিচালিত হয়েছে, যেখানে বহু গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। সেখানেও সরকার নিয়মিতভাবে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে এই সংগঠিত অপরাধ দমনে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments