ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস ইসরায়েলি আগ্রাসন এখনও অব্যাহত রয়েছে। প্রতিনিয়ত নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ অসংখ্য নিরীহ স্বাধীনতাকামী মুসলমান প্রাণ হারাচ্ছেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এক ধরনের স্বস্তির খবর নিয়ে এসেছে হামাসের সামরিক শাখা—ইজ্জেদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেডে প্রায় ৩০ হাজার নতুন যোদ্ধা যুক্ত হয়েছে।
সম্প্রতি সৌদি আরবভিত্তিক স্যাটেলাইট চ্যানেল আল-আরাবিয়ার একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই বিপুল সংখ্যক নতুন সদস্য গোপন প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তাদেরকে গেরিলা কৌশল, রকেট উৎক্ষেপণ, এবং মাটির নিচে বোমা পুঁতে রাখাসহ আধুনিক যুদ্ধকৌশলে দক্ষ করে গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে এই নতুন শক্তি যেমন আশার আলো দেখাচ্ছে গাজার নিরস্ত্র জনগণের জন্য, তেমনি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ইসরায়েলি প্রশাসনের ভেতরে, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দলে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হামাস বর্তমানে ড্রোন ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের সংকটে থাকলেও, আইডিএফের ব্যবহৃত ও অবিস্ফোরিত অস্ত্রাংশ পুনঃব্যবহার করে স্থানীয়ভাবে অস্ত্র তৈরি করছে। নতুন যোদ্ধাদের দক্ষতায় এসব অস্ত্র উৎপাদনের গতিও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইতিহাস বলছে, হামাস দীর্ঘ সময় নীরব থাকলেই বড় কিছু ঘটার ইঙ্গিত মেলে। ২০২৩ সালের অক্টোবরেই তার একটি নিদর্শন দেখা গেছে—যখন হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভেতরে ড্রোন ও উড়ন্ত যান ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছিল। এবারও তেমন কিছু ঘটতে চলেছে কি না, তা নিয়েই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চলছে জল্পনা।
বিশ্বের বেশ কিছু প্রভাবশালী গণমাধ্যম ইতোমধ্যেই মন্তব্য করেছে, এই নতুন ৩০ হাজার যোদ্ধা ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। যদিও হামাস যুদ্ধবিরতি ও একটি পূর্ণাঙ্গ শান্তিচুক্তির পক্ষে আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েল গাজায় যে সামরিক অভিযান শুরু করে, তাতে এখন পর্যন্ত সরকারি হিসাবে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৫১ হাজার মানুষ এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ১৭ হাজার। গাজার মিডিয়া অফিসের মতে, প্রকৃত মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে, যার মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
এই পটভূমিতে হামাসের সামরিক শক্তিতে নতুন এই সংযোজন ভবিষ্যতের যুদ্ধ পরিস্থিতিকে কোন দিকে নিয়ে যাবে, সেটাই এখন বিশ্ববাসীর আগ্রহের কেন্দ্রে।