কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা মারাত্মকভাবে বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের আকাশসীমার কাছাকাছি টহলরত ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলোকে তারা প্রতিরোধ করে পিছু হটতে বাধ্য করেছে।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিটিভি নিউজ ও রেডিও পাকিস্তান জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে ভারতীয় বিমানবাহিনীর চারটি রাফাল জঙ্গিবিমান নিয়ন্ত্রণ রেখা (LOC) অতিক্রম না করেই অধিকৃত কাশ্মীর এলাকায় টহল দেয়। তবে পাকিস্তান এয়ার ফোর্স (PAF) দ্রুত পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সক্ষমতা প্রদর্শন করলে ভারতীয় বিমানগুলো তড়িঘড়ি ফিরে যায়।
নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানি বাহিনী ভারতের যেকোনো আগ্রাসনের জবাব দিতে সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে এবং সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে আছে। এরই মধ্যে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ উত্থাপন করেছে যে, হামলার জন্য কোনও প্রমাণ ছাড়াই তারা ইসলামাবাদকে দায়ী করছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন এবং ভারতের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, কোনো ভিত্তিহীন অভিযোগে পাকিস্তানকে দোষারোপ করা অনৈতিক এবং তা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সংকটময় করে তুলছে।
অন্যদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাহেলগাঁও হামলার জবাবে দেশটির সেনাবাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন, যা সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানিয়েছেন, সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং যেকোনো ভারতীয় হামলার বিরুদ্ধে তারা প্রস্তুত। অপরদিকে, তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এক টেলিভিশন বিবৃতিতে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে ভারত আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সামরিক অভিযান চালাতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল পাহেলগাঁওয়ে সংঘটিত হামলায় অধিকাংশই পর্যটকসহ প্রাণ হারান ২৬ জন। ২০০০ সালের পর থেকে কাশ্মীরে এটিকে অন্যতম ভয়াবহ সশস্ত্র হামলা হিসেবে দেখা হচ্ছে।