খুলনায় টানা বৃষ্টিতে জনজীবন চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ৩৬ ঘণ্টায় শহরে মোট ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এতে শহরের প্রধান সড়ক থেকে অলিগলি পর্যন্ত প্রায় সব এলাকাই পানিতে তলিয়ে গেছে।
বৃষ্টির প্রভাবে মঙ্গলবার ভোরে খুলনা সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের রেকর্ড রুমের ছাদ ধসে পড়ে। এতে শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পানিতে ভিজে যায়। খুলনা জেলা রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান জানান, ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আগেও এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা এখন বিকল্প ভবনের সন্ধান করছি।
শহরের রয়েল মোড়, টুটপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, আহসান আহমেদ রোড, বয়রা, মুজগুন্নি, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর, দৌলতপুর, কুয়েট রোড, ফুলবাড়িগেটসহ অধিকাংশ এলাকাতেই পানি জমে রয়েছে। এর ফলে স্থানীয়রা যানবাহন চলাচলসহ দৈনন্দিন কাজে পড়েছেন ভোগান্তিতে।
মুজগুন্নির বাসিন্দা মেরাজ আল সাদী জানান, ১২ নম্বর রোডে বাইতুন মামুর মসজিদে পর্যন্ত পানি উঠেছে। বাস্তহারা এলাকার ঘরবাড়িতেও পানি ঢুকেছে। এ অবস্থায় চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
এক ইজিবাইক চালক জানান, যাত্রী সংকটের কারণে আয়ে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। রিকশা চালক রনি বলেন, “বৃষ্টিতে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। যারা বের হন, তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে আমরা কখনো ১০ টাকা বেশি চাই, কেউ দেয়, কেউ দেয় না। তবুও কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।”
আবহাওয়ার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপের প্রভাবে এ ভারী বর্ষণ হচ্ছে। গতকাল সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত ৭০ মিলিমিটার এবং আজ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আরও ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
নগরজুড়ে জলাবদ্ধতা ও দুর্ভোগ অব্যাহত রয়েছে, যা নগরবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বড় প্রভাব ফেলছে।