Saturday, April 19, 2025
spot_imgspot_img
Homeজাতীয়বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক: নতুন অধ্যায়ের সম্ভাবনা

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক: নতুন অধ্যায়ের সম্ভাবনা

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নতুন মোড় নিয়েছে। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তনের ফলে দেশটির রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নতুন করে বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের সম্ভাবনাও উজ্জ্বল হয়েছে। পাকিস্তানের সাবেক সেনেটর এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল কাইয়ুম সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর মতামত তুলে ধরেন।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তন নিয়ে পাকিস্তানের মূল্যায়ন

কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশি তরুণ ও শিক্ষার্থীদের সাহসিকতায় তারা মুগ্ধ। জনগণ স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে যে রুখে দাঁড়িয়েছে, তা প্রশংসার দাবি রাখে। তিনি বলেন, সেই শাসন শুধু শিক্ষার্থীদের দমন করেনি, বরং বহু ধর্মীয় চিন্তাবিদকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল।

ইসহাক দারের ঢাকা সফর

পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আগামী ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় সফরে আসছেন। এ সফর সম্পর্কে কাইয়ুম বলেন, এটি দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য, পর্যটন, নিরাপত্তা এবং সার্কের কার্যকারিতা বাড়ানোর মতো বিষয়ে আলোচনা হবে।

ঐতিহাসিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের সম্ভাবনা

তিনি উল্লেখ করেন, অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলে গিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক পুনর্গঠনের এখনই সঠিক সময়। অর্থনৈতিক সহযোগিতা, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং পর্যটন খাতে উন্নয়ন এই সম্পর্কের মূল ভিত্তি হতে পারে।

ভারতের প্রভাব এবং চ্যালেঞ্জ

ভারতের প্রভাব সম্পর্কে জেনারেল কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশ এখন নিজস্ব কূটনৈতিক অবস্থান নিয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী। তবে ভারতের প্রভাব দুই দেশের সম্পর্ককে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবিত করেছে। পাকিস্তানের আশা, বাংলাদেশ আঞ্চলিক কৌশলে ভারসাম্য বজায় রাখবে।

বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা

কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। পোশাক, কৃষিপণ্য, ওষুধসহ বিভিন্ন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো যেতে পারে।

সাংস্কৃতিক সম্পর্ক উন্নয়ন

দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টিভি প্রোগ্রাম, সংবাদপত্র ও ডকুমেন্টারি বিনিময়ের মাধ্যমে পারস্পরিক বোঝাপড়া আরও গভীর করা সম্ভব।

ইতিহাসের তিক্ততা মেটানো

১৯৭১ সালের যুদ্ধের প্রসঙ্গে কাইয়ুম বলেন, অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগোনো উচিত। তিনি উভয় পক্ষকে ক্ষমা ও সমঝোতার ভিত্তিতে সম্পর্ক উন্নয়নের আহ্বান জানান।

দুই দেশের ভবিষ্যৎ কৌশল

পাকিস্তানের মতে, সার্কসহ আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে দূরত্ব কমানো সম্ভব। তাদের লক্ষ্য হবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং কূটনৈতিক ঐক্যের মাধ্যমে আঞ্চলিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু করা

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments