টাঙ্গাইলের সখীপুরে পুলিশের হেফাজতে মোস্তাফিজুর রহমান রুবেল (৫০) নামে বিএনপির এক নেতার মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্য ও উদ্বেগ। রুবেল ছিলেন সখীপুর উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক। পুলিশের ভাষ্য, থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার সকালে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। তবে রুবেলের পরিবারের দাবি, তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং থানায় তাকে শারীরিক নির্যাতনের শিকার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে রুবেল মদ্যপ অবস্থায় স্থানীয় একটি টেইলার্সের কর্মচারীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এরপর টেইলার্স মালিকের ফোন পেয়ে এসআই লিবাস চক্রবর্তী ঘটনাস্থলে গিয়ে রুবেলকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। পুলিশ জানায়, থানায় আনার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে প্রথমে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে অবস্থার আরও অবনতি হলে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনের কারণে রুবেলের মৃত্যু হয়েছে।
তবে পরিবারের অভিযোগ, রুবেল সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন এবং তাকে গ্রেপ্তারের পর থানায় নির্যাতন করা হয়েছে। তার মামা আবদুর রাজ্জাক তালুকদার বলেন, “রুবেলকে আটকের পর আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। এমনকি হাসপাতালে নেওয়ার পরও পুলিশ কিছু জানায়নি। মৃত্যু হওয়ার পর আমরা খবর পাই। পরে তার দেহে নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পাই।”
রুবেলের মা রাহেলা পারভীন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার সুস্থ ছেলেকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। তারা আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে।”
এ বিষয়ে সখীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ভূঁইয়া জানান, “রুবেল মদ্যপ অবস্থায় ধাক্কাধাক্কির সময় দোকানের কাঁচের গ্লাসে আঘাত পান, এতে তার কপাল ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কেটে যায়। আমরা তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিই। অবস্থার অবনতি হলে সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।”
এদিকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. সামি বলেন, “রুবেলের চোখের পাশে ও হাতে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে সেই আঘাতগুলো প্রাণঘাতী মনে হয়নি। তিনি ধারণা করেন, অতিরিক্ত অ্যালকোহল পানজনিত কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হতে পারে।”