মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলেন, কিন্তু আর জীবিত ফেরা হলো না উম্মে হাবিবা রজনীর (৩৭)। ঢাকার উত্তরায় একটি বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন এই মমতাময়ী মা। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের বাওট গ্রামের স্কুলপাড়া এলাকাজুড়ে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে রজনীর মরদেহ নিজ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে হৃদয়বিদারক সেই খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা, ভাই-বোনসহ আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা। তাদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে গ্রামের পরিবেশ। পরে তাকে শেষবারের মতো দেখার সুযোগ দেওয়া হয় স্বজনদের। এরপর মরদেহ নেওয়া হয় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সাজিপুর গ্রামে, তার স্বামীর বাড়িতে।
রজনী ছিলেন মটমুড়া ইউনিয়ন বিএনপির নেতা আবদুল হামিদের কন্যা এবং কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের সাজিপুর গ্রামের ব্যবসায়ী জোহরুল ইসলামের স্ত্রী। স্বামীর কর্মস্থল ঢাকায় তারা একসঙ্গে বসবাস করতেন। তাদের একমাত্র কন্যা ঝুমঝুম খাতুন (১২) মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
দুর্ঘটনার দিন, প্রতিদিনের মতোই মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলেন রজনী। ঠিক তখনই একটি প্রশিক্ষণ বিমান হঠাৎ করে তাদের সামনে এসে বিধ্বস্ত হয়। এতে রজনী মারাত্মকভাবে দগ্ধ হন। দ্রুত তাকে সিএমএইচ বার্ন ইউনিটে নেওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি—চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
পরিবার জানিয়েছে, রজনীর দাফন সম্পন্ন হবে তার শ্বশুরবাড়ি কুষ্টিয়ার চর সাজিপুর গ্রামে। দুর্ঘটনায় আহত হলেও সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গেছে তার মেয়ে ঝুমঝুম। বর্তমানে সে পরিবারের সঙ্গেই আছে এবং প্রাথমিক চিকিৎসার পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে।
এদিকে রজনীর মৃত্যুতে বাওট গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবেশীরা বলেন, রজনী ছিলেন অমায়িক ও স্নেহপরায়ণ এক মানুষ। তার এমন মর্মান্তিক মৃত্যু এলাকার মানুষকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছে।