গত ১৯ জুলাই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইতিহাসের প্রথম বড় সমাবেশের আয়োজন করেছিল জামায়াতে ইসলামী। দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, মাত্র সাড়ে ৩ কোটি টাকার বাজেটেই এই বিশাল আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে।
সমাবেশে অংশ নিতে দেশজুড়ে কয়েক হাজার বাস, লঞ্চ ও ট্রেন ভাড়া নেওয়া হয়। ঢাকা শহরজুড়ে ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়েছিল সমাবেশ কেন্দ্রিক প্রচারণা। রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা ওঠে, এত বড় সমাবেশে আসলে কত ব্যয় হয়েছে? অনেকে দাবি করেন খরচের পরিমাণ ১০০ থেকে ২০০ কোটি টাকারও বেশি।
তবে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান গত ২৫ জুলাই রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত আয়োজিত রোকন সম্মেলনে বিষয়টি পরিষ্কার করেন। তিনি জানান, “সমাবেশে কেন্দ্রীয়ভাবে সাড়ে ৩ কোটি টাকার মতো খরচ হয়েছে, এর বেশি নয়। কারও কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হয়নি, আমরা নিজেরাও চাঁদা তুলি নাই। কেউ বিশ্লেষণ করে যা বলুক, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না।”
তিনি আরও জানান, ৫ আগস্টের ঘটনার পর বহু বড় ব্যবসায়ী টাকার প্রস্তাব নিয়ে এলেও তা গ্রহণ করেননি। কেউ চা খাওয়ার দাওয়াত দিয়েছেন, কেউ বড় অঙ্কের আর্থিক সহায়তা দিতে চেয়েছেন। কিন্তু সব প্রস্তাবই জামায়াতের পক্ষ থেকে বিনয়ের সাথে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জামায়াত আমির বলেন, “হেলিকপ্টার মালিকরাও আমাদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। কেউ বলেছেন, বললেই হেলিকপ্টার পাবেন। কেউ আবার নির্বাচনে জয়ী হোক এমন প্রত্যাশা নিয়ে বড় সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু আমরা এসব প্রস্তাবে সাড়া দেইনি। আল্লাহর ওপর ভরসা রেখেছি।”
তিনি বলেন, “আজকে এক সপ্তাহে আমাদের যে ব্যয় হচ্ছে, তা আগে দুই মাসে হতো না। কিন্তু এতসব খরচ সত্ত্বেও বর্তমানে জামায়াতের কোনো ঋণ নেই। আল্লাহর রহমতে মুমিনদের দোয়াই আমাদের সব ঘাটতি পূরণ করেছে।”
সমাবেশ আয়োজনের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে জামায়াত আমির বলেন, “এই সমাবেশের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করতে চেয়েছি, জামায়াত আগামীর রাজনৈতিক সংগ্রামের জন্য কতটা প্রস্তুত। এটি ছিল প্রস্তুতির ছোট্ট একটি নমুনা।”
তিনি আরো বলেন, “আগামীতে যদি ৩০-৩৫ আসনের বদলে ১০ গুণ আসনে নির্বাচন করতে হয়, তবে প্রস্তুতিও ১০ গুণ বাড়াতে হবে।”
শেষে তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, “জামায়াত কখনো চাঁদাবাজি বা সন্ত্রাসের পথে হাঁটে না। আমরা দল পরিচালনা করতে পারি, ইনশাআল্লাহ দেশও পরিচালনা করতে পারব।”