নারীর শরীরের স্বাভাবিক কার্যকারিতা এবং সুস্থ জীবনের জন্য আয়রন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টি উপাদান। তবে দুঃখজনকভাবে, আমাদের দেশের অনেক নারীই আয়রনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন নন। আয়রনের ঘাটতি হলে শরীরে দুর্বলতা, মাথাব্যথা, দাঁড়িয়ে থাকলে মাথা ঘোরা বা ক্লান্তিভাব দেখা দিতে পারে—যা প্রায়ই সাধারণ ক্লান্তি ভেবে এড়িয়ে যাওয়া হয়। এই ঘাটতি পূরণে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আয়রনসমৃদ্ধ খাবার রাখা জরুরি। নিচে এমনই ৫টি প্রয়োজনীয় খাবারের কথা তুলে ধরা হলো—
১. গুড়
পিরিয়ডকালীন দুর্বলতা দূর করতে অতীতে ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে গুড় ব্যবহৃত হতো। এটি শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণে কার্যকর এবং চিনি খাওয়ার ইচ্ছা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। প্রতি ১০০ গ্রাম গুড়ে প্রায় ১১ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। সাদা চিনি বাদ দিয়ে চা, রুটি কিংবা মিষ্টিতে গুড় ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে।
২. পালং শাক
পালং শাকে রয়েছে উদ্ভিদ-ভিত্তিক আয়রন, যা শরীরে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে খেলে আরও ভালোভাবে শোষিত হয়। প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে প্রায় ২.৭ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। কাঁচা পালং শাকে অক্সালেট থাকায় তা আয়রনের শোষণ ব্যাহত করতে পারে, তাই রান্না করে খাওয়াই ভালো।
৩. মসুর ডাল
প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় থাকা মসুর ডাল আয়রনের চমৎকার উৎস। এতে প্রোটিন ও ফাইবারও রয়েছে। আয়রনের ঘাটতি মোকাবিলায় প্রতিদিন মসুর ডাল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা ডালে রয়েছে প্রায় ৭৯ মিলিগ্রাম আয়রন।
৪. খেজুর
যদিও আয়রনের পরিমাণ তুলনামূলক কম (প্রতি ১০০ গ্রামে ১ মিলিগ্রাম), তবুও খেজুরের প্রাকৃতিক চিনি, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে শক্তি জোগায়। এটি আয়রনসমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে খাওয়া হলে আরও উপকারী হয়ে ওঠে। এটি মিষ্টি খাবারের বিকল্প হিসেবেও দারুণ কার্যকর।
৫. বিটরুট
রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে বিটরুটের কার্যকারিতা বহুদিনের প্রমাণিত। যদিও এতে আয়রনের পরিমাণ কম (প্রতি ১০০ গ্রামে ০.৮ মিলিগ্রাম), তবে এটি রক্ত তৈরির প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করে এবং রক্তপ্রবাহ উন্নত করে। বিশেষ করে যেসব নারীর পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত হয়, তাদের জন্য এটি বেশ উপকারী।
এই আয়রনসমৃদ্ধ খাবারগুলো নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে নারীরা সহজেই আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে সুস্থ ও সক্রিয় থাকতে পারেন।