সম্প্রতি বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ঐক্য পরিষদের এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বৃত্তি পরীক্ষা নিয়ে যে মন্তব্য করা হয়েছে, তা সরকারের নজরে এসেছে। এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার (২ আগস্ট) এক বিবৃতিতে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য “সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা” পরিচালনা করা হচ্ছে। অধিকাংশ সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীই নিম্নআয়ের পরিবারের সন্তান। এই বৃত্তি তাদের আর্থিকভাবে উৎসাহ দেয় এবং শিক্ষায় ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
অন্যদিকে, কিন্ডারগার্টেনগুলোর বেশিরভাগ শিক্ষার্থী অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছল পরিবারের। তাদের জন্য দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ‘কিন্ডারগার্টেন বৃত্তি পরীক্ষা’ নেওয়া হয়, যেখানে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা দীর্ঘদিন ধরে বৃত্তি পরীক্ষার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাদের সেই দাবির প্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখে। এটি কোনোভাবেই বেসরকারি শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক নয়।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংবিধানের ১৭(ক) অনুচ্ছেদ এবং ১৯৯০ সালের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা আইন অনুযায়ী সরকার সব শিশুর জন্য অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সরকারি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা বাধ্যতামূলক হলেও কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি হওয়া সম্পূর্ণ অভিভাবকের পছন্দনির্ভর। সেখানে সরকার-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (PPP) নীতিমালার কোনো প্রাসঙ্গিকতা নেই।
শেষে বলা হয়, যারা ইচ্ছায় সন্তানদের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করান, তারা নিজের সিদ্ধান্তে তা করেন। সেই প্রেক্ষাপটে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বৃত্তি পরীক্ষাকে বৈষম্যমূলক বলা যথার্থ নয়, বরং এটি দেশের সব শিশুর জন্য উন্মুক্ত অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষার নীতিরই অংশ।