ইউরোপের মন্থর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মধ্যে জ্বালানি এবং ডিজিটাল সংযোগের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা ও সরবরাহ চেইন এখন সমুদ্রতল অবকাঠামো হয়ে উঠেছে একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকা। সম্প্রতি ইউরোপীয় অঞ্চলের সমুদ্রতল অবকাঠামোকে ‘অ্যাকিলিস হিল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এটির মধ্যে রয়েছে সাবমেরিন কেবল ও পাইপলাইন, যা উভয়ই যোগাযোগ ও শক্তি সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সম্প্রতি সুইডেন ও লাটভিয়ার মধ্যে একটি ডাটা কেবল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ইউরোপের সমুদ্রতল অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। লাটভিয়া বাহ্যিক কোনো শক্তির কারণে কেবলটির ক্ষতির দাবি করেছে, যা ইউরোপীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমুদ্রতল অবকাঠামো নিয়ে আশঙ্কা উত্থাপন করেছে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, যদি কোনো পরিকল্পিত হামলা ঘটে, তাহলে ইউরোপের যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যার ফলে চিকিৎসা, আইন-শৃঙ্খলা, এবং জরুরি পরিষেবাগুলোর উপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
এ পর্যন্ত বাল্টিক সাগরের তলদেশে প্রাকৃতিক গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং ডাটা পরিবহনকারী পাইপলাইন ও কেবলের ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ইউরোপীয় কর্মকর্তারা অন্তর্ঘাতমূলক সন্দেহে তদন্ত করছেন, এবং রাশিয়াকে একাধিকবার অভিযোগের মধ্যে রাখা হলেও তা অস্বীকার করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়ার সামরিক তৎপরতার কারণে ইউরোপের সমুদ্রতল অবকাঠামোর নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। তবে, এসব ঘটনার জন্য সরাসরি প্রমাণ পাওয়া কঠিন। ইউরোপীয় কর্মকর্তারা এই ধরনের ঘটনা বাড়তে থাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার জন্য ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
সমুদ্রতল অবকাঠামোর নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য নতুন প্রকল্প চালু করা হয়েছে এবং সমুদ্রপথে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের অবকাঠামোর ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি সৃষ্টি করছে।