ভারত আবারও বাংলাদেশের পাটপণ্যের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এবার চার ধরনের পাটজাত পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ করেছে দেশটি। তবে মুম্বাইয়ের নভোসেবা সমুদ্রবন্দর দিয়ে এসব পণ্য আমদানির সুযোগ রাখা হয়েছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়, যা ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা পণ্যগুলো হলো— পাটের বস্তা ও ব্যাগ, ব্লিসড ও আনব্লিসড বোনা পাটের কাপড়, পাটের সুতা কর্ডেজ দড়ি।
এ নিয়ে গত ছয় মাসে বাংলাদেশি পণ্য আমদানিতে ভারত চারবার নিষেধাজ্ঞা দিল। এর আগে ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল এবং কোমল পানীয়সহ বিভিন্ন পণ্যে বিধিনিষেধ আরোপ করে। ৯ এপ্রিল কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুযোগও বাতিল করে। এরপর ২৭ জুন কাঁচা পাট, পাটের রোল, পাটের সুতা এবং বিশেষ ধরনের কাপড় স্থলপথে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। নতুন সিদ্ধান্তে তালিকায় যুক্ত হওয়া চার পণ্য বাংলাদেশের পাটপণ্য রপ্তানিতে বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুর রউফ বলেন, ভারতের এমন অশুল্ক বাধার আশঙ্কা আগেই ছিল। সে অনুযায়ী কিছু প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। দেশের বাজারে পলিথিনের বদলে পাটের ব্যবহার বাড়ানো এবং সাধারণ পাটপণ্যের বদলে মূল্য সংযোজিত উচ্চমানের পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তার মতে, ভারতের এই পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের জন্য ‘সাপে বর’ হতে পারে।
বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সংগঠনের সভাপতি রাশেদুল করিম মুন্না জানান, ভারতীয় আমদানিকারকদের বেশিরভাগই কলকাতাভিত্তিক। স্থলপথে কলকাতায় সহজে পণ্য পৌঁছানো দুই দেশের জন্যই লাভজনক ছিল। তবে তিন মাস আগে কিছু পণ্যে স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সমুদ্রপথে মুম্বাইয়ের নভোসেবা বন্দর হয়ে কলকাতায় পণ্য আনতে আমদানিকারকদের পরিবহন ব্যয় বেড়েছে চার গুণ এবং সময় লেগেছে দ্বিগুণ। নতুন করে চার পণ্য নিষিদ্ধ হওয়ায় ভারতকে রপ্তানি বাজার হিসেবে রাখা এখন বাণিজ্যিকভাবে অযৌক্তিক হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে নজর দিয়ে পণ্যে বৈচিত্র্য আনা, মান উন্নয়ন ও মূল্য সংযোজনের উদ্যোগ নিলে কাঁচাপাট রপ্তানির প্রতিবন্ধকতা দীর্ঘমেয়াদে পাটশিল্পের জন্য সুফল বয়ে আনতে পারে।