Saturday, August 16, 2025
spot_imgspot_img
Homeদেশের খবররংপুরে পিতা-দাদার হত্যার বিচার দাবিতে দলিত পরিবারের মানববন্ধন

রংপুরে পিতা-দাদার হত্যার বিচার দাবিতে দলিত পরিবারের মানববন্ধন

রংপুরের তারাগঞ্জে চোর সন্দেহে রূপলাল রবিদাস ও প্রদীপ লাল রবিদাসকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিহতদের পরিবার ও বাংলাদেশ দলিত পরিষদ এই কর্মসূচি থেকে অবিলম্বে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানায়।

শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ দলিত পরিষদের আয়োজনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে নিহতদের স্বজন ছাড়াও সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দিতে গিয়ে নিহত প্রদীপ লালের মেয়ে পলাশী রানী বলেন, আমার বাবা যদি সত্যিই অপরাধী হতো, তাহলে তাকে পুলিশের হাতে দিত। বাবার সঙ্গে সবসময় আইডি কার্ড থাকত, তারা চাইলে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারত। কিন্তু কেন তাকে মেরে ফেলা হলো? আমার বাবা-দাদার হত্যাকারীদের আমরা ফাঁসি চাই।”

প্রদীপ লালের ছেলে আপন দাস বলেন, আমার বাবা প্রতিবন্ধী ছিলেন। তার একমাত্র ভ্যান নিয়েই তিনি চলাফেরা করতেন। তিনি কীভাবে চুরি করবেন? আমাদের বাবাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

নিহতদের স্বজনরা অভিযোগ করেন, রূপলাল ও প্রদীপকে প্রকাশ্যে অমানবিক নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার ভিডিও ফুটেজে হত্যাকারীদের দেখা গেলেও পুলিশ বিলম্ব করায় অনেকে পালিয়ে গেছে। দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না হলে দলিত সম্প্রদায় আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বলে আশঙ্কা করেন তারা।

শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ বলেন, “এ ধরনের নির্মম হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং দলিত সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”

নিহতদের পরিবার জানায়, তারা কোনো অপরাধে জড়িত ছিলেন না। শুধুমাত্র অপবাদ দিয়ে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যা সংঘটিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট রাতে মিঠাপুকুরের ছড়ান বালুয়া এলাকা থেকে প্রদীপ লাল ভ্যানে তার দাদাকে নিয়ে ফেরার পথে বুড়িরহাট বটতলায় স্থানীয়রা তাদের আটকায়। ‘স্পিড ক্যানের’ বোতলে তরল পদার্থ ও কিছু ওষুধ পেয়ে উত্তেজিত জনতা তাদের মাঠে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে মারধর করে। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর রূপলাল ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং ভোরে প্রদীপ লাল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

এ ঘটনায় নিহত রূপলালের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে প্রায় ৫০০-৭০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ভিডিও ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে রিমান্ডে নেয়।

অন্যদিকে, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তারাগঞ্জ থানার দুই এসআই ও ছয় কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবু জোবায়েরকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments