মিয়ানমারে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আবহে আবারও বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা বাহিনী। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কায়াহ প্রদেশের মাউচি জেলায় পরিচালিত এ অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৬ জন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন নারী, পুরুষ ও শিশুসহ সাধারণ মানুষ। খবর দিয়েছে মিয়ানমারভিত্তিক গণমাধ্যম ইরাওয়াদি।
কায়াহ প্রদেশটি ২০২৩ সালের নভেম্বরে সেনাদের হাত থেকে দখল নেয় জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী কারেন্নি আর্মি। পরবর্তীতে তারা ‘কায়াহ স্টেট ইন্টেরিম এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল (কেআইইসি)’ নামে একটি অন্তর্বর্তী প্রাদেশিক সরকার গঠন করে।
কেআইইসি’র তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে ৮ জন নারী, ১৮ জন পুরুষ ও ২ জন শিশু রয়েছে। আরও ৬ জনের পরিচয় এখনো শনাক্ত হয়নি। পাশাপাশি ৫ জন আহত হয়েছেন। সংস্থাটির সেকেন্ড সেক্রেটারি উ বানিয়ার অভিযোগ করেন, “মাউচিতে প্রচুর খনি থাকায় এখানে নিয়মিত মানুষের সমাগম ঘটে। কেউ খনির কাজে আসে, কেউ খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রি করতে আসে। জান্তা ইচ্ছাকৃতভাবে এখানকার অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবন ধ্বংস করতে চায় এবং মানুষকে আতঙ্কে রাখতে চায়।”
তিনি আরও জানান, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত কায়াহ অঞ্চলে ১৪ বার বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা, তবে সর্বশেষ হামলাটি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। কারণ এর আগের সব হামলায় মিলিয়ে প্রাণহানি হয়েছিল ১১ জনের, কিন্তু মঙ্গলবারের হামলাতেই নিহত হয়েছেন ৩৬ জন।
এ বিষয়ে জান্তার কোনো মুখপাত্র মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে কেআইইসি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের কাছে এ হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে তুলে ধরে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইংয়ের নেতৃত্বাধীন সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই কারারুদ্ধ রয়েছেন গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচি ও তার দল এনএলডি’র হাজারো নেতা-কর্মী। গত বছর এনএলডি’র নিবন্ধনও বাতিল করে জান্তা।
সম্প্রতি অভ্যুত্থানের পর প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে সামরিক সরকার। আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ।