ইরান বিভিন্ন দেশে গোপনভাবে অস্ত্র কারখানা স্থাপন করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদে। তবে কোন কোন দেশে এসব কারখানা নির্মিত হয়েছে, তা তিনি এখনও প্রকাশ করেননি। খবর প্রকাশ করেছে ইরান ইন্টারন্যাশনাল।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাসিরজাদে বলেন, “আমরা কয়েকটি দেশে অস্ত্র কারখানা গড়ে তুলেছি, কিন্তু এখনই স্থানসমূহের নাম ঘোষণা করছি না।” তিনি আরও জানিয়েছেন, গত এক বছরে ইরান নতুন ধরনের উন্নত এবং নিয়ন্ত্রণযোগ্য ওয়ারহেডের পরীক্ষা করেছে।
এই মন্তব্য এমন এক সময় এসেছে, যখন বৃহস্পতিবার ইরানের নৌবাহিনী ওমান উপসাগর এবং উত্তর ভারত মহাসাগরে বৃহৎ সামরিক মহড়ায় সমুদ্রপৃষ্ঠের লক্ষ্যবস্তুতে ক্রুজ মিসাইল পরীক্ষা চালায়। এর আগে গত মাসে ইরান ও রাশিয়া যৌথভাবে ক্যাসপিয়ান সাগরে “কাসারেক্স ২০২৫” নামের মহড়া আয়োজন করেছিল।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান আধুনিক অস্ত্র সংগ্রহে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। এর ফলে দেশটি স্থানীয়ভাবে অস্ত্র উৎপাদন এবং পুরোনো প্রযুক্তি আধুনিক করার পথে এগোচ্ছে।
নাসিরজাদে আরও দাবি করেছেন, যদি গত জুনে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাত ১৫ দিন স্থায়ী হতো, তবে শেষ তিন দিনে ইসরায়েল কোনো ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে পারত না। তিনি জানান, ইরান এই সংঘাতে তাদের সবচেয়ে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র ‘কাসেম বাসির’ ব্যবহার করেনি, যার পাল্লা প্রায় ১,২০০ কিলোমিটার এবং উন্নত গাইডেন্স ও প্রতিরোধ প্রতিহত প্রযুক্তি রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুদ্ধের শুরুতে প্রায় ৪০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র আটকানো হলেও শেষ দিকে ৯০ শতাংশ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ১২ দিনের যুদ্ধে তারা প্রায় ৯০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ১৩ জুন ইসরায়েলি হামলায় ইরানের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীরা নিহত হন এবং কিছু বিমান প্রতিরক্ষা ও পারমাণবিক স্থাপনায় ক্ষতি হয়। পাল্টা হামলায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ইসরায়েলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানে। প্রায় ১২ দিন হামলা-পাল্টাহামলার পর ২৪ জুন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়।