আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি লিভার ও ক্যানসার আক্রান্ত, পাশাপাশি কিডনির জটিলতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী খায়রুল ইসলাম। সোমবার (২৫ আগস্ট) আদালতের প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের তিনি এই তথ্য জানান।
আদালতে খায়রুল ইসলাম জানান, মামলার ঘটনার সঙ্গে আফ্রিদির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। বাদীর অভিযোগ অনুযায়ী, নিহত আসাদুল হক বাবুকে হত্যার ঘটনা ঘটে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে। এছাড়াও, বাদী গত বছরের ১১ নভেম্বর দেওয়া এভিডেভিডে তথ্যগত ভুলের কারণে আফ্রিদির নাম যুক্ত হয়েছে। মামলায় তাকে খালাস দিলে বাদীর কোনো আপত্তি নেই। এ কারণে রিমান্ডের যৌক্তিকতা নেই বলে দাবি করেন তিনি।
আইনজীবী আরও জানান, আফ্রিদির চিকিৎসা চলমান এবং অতিরিক্ত হাঁটাচলার ফলে প্রস্রাবে রক্ত আসে। তার স্ত্রী বর্তমানে গর্ভবতী, তাই মানবিক বিবেচনায় তার জামিন মঞ্জুর করা উচিত।
রিমান্ডের পক্ষে বাদীর আইনজীবী ইব্রাহিম খলিল, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন এবং ঢাকা বারের সিনিয়র সহসাধারণ সম্পাদক জহিরুল হাসান মুকুল শুনানি করেন। তারা জানান, আফ্রিদি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। মিডিয়ায় লাইভ সম্প্রচারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ওপর হত্যাকাণ্ড ঘটাতে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তারা রিমান্ডে নেওয়ার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে কারা সম্পৃক্ত এবং কারা অর্থদাতা ও অস্ত্রদাতা তা উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে।
আদালতে আফ্রিদি কাঠগড়ার লোহার রেলিংয়ে হাত দিয়ে মনোযোগীভাবে শুনানি শুনেছেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী আদালতকে জানান, আফ্রিদি আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন এবং ছাত্রদের সমর্থনে একাধিক পোস্ট করেছিলেন। তিনি রাজনৈতিকভাবে আলাদা পরিচয় নেই; তার বাবা ব্যবসায়ী এবং কোনো রাজনৈতিক পদ নেই। কিডনির জটিলতার কারণে আদালতের কাছে অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা চাওয়া হয়। এরপর আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানি শেষে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার সময় আফ্রিদিকে পেটে হাত দিয়ে খুড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায়। হাজতখানার বাইরে তার পা খালি ছিল, ভিড়ে জুতা হারিয়েছেন। এর আগে ১৩ মে গ্রেপ্তারের সময় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম হট্টগোলের মধ্যে জুতা হারিয়েছিলেন।
আগামী ২৪ আগস্ট রাতে সিআইডি বরিশাল থেকে তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করে। ১৭ আগস্ট তার বাবা নাসির উদ্দিন সাথীকে গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরদিন পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
মামলার তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ী থানাধীন রাস্তার ওপর মো. আসাদুল হক বাবু গুলিবিদ্ধ হন এবং হাসপাতালে মারা যান। ৩০ আগস্ট নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন হত্যার মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নম্বর এবং তার বাবা ২২ নম্বর আসামি।