Tuesday, August 26, 2025
spot_imgspot_img
Homeরাজনীতিঅভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে প্যানেল চূড়ান্ত করতে পারেনি জাবি ছাত্রদল

অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে প্যানেল চূড়ান্ত করতে পারেনি জাবি ছাত্রদল

৩৩ বছর পর আগামী ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন। গত ২১ আগস্ট মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা শেষ হয়েছে। নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হলেও শাখা ছাত্রদল এখনো তাদের প্যানেল ঘোষণা করতে পারেনি। এরই মধ্যে ইসলামী ছাত্রশিবির ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাকসু নির্বাচন সামনে রেখে গত ৮ আগস্ট ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের দিয়ে বর্ধিত ও হল কমিটি ঘোষণা করে। তবে ঘোষিত কমিটিতে বিতর্কিত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগে বলা হয়, ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী, মাদক ও ছিনতাইয়ে জড়িত, এমনকি ভ্রূণ হত্যার মামলার আসামিকেও পদ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে এবং শীর্ষ পাঁচ নেতাকে টানা নয় দিন ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দেয়।

পরে ১৭ আগস্ট ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ক্যাম্পাসে গেলে শীর্ষ নেতারা প্রবেশ করেন। তবে বিক্ষুব্ধ কর্মীদের সঙ্গে তাদের তীব্র মুখোমুখি পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরপর থেকে সংগঠনটি কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে— শীর্ষ পাঁচ নেতা এবং বিদ্রোহী অংশ।

২১ আগস্ট বিকাল থেকে ছাত্রদলের প্যানেল চূড়ান্ত করতে টানা মিটিং শুরু হয়, যা পরদিন সকাল পর্যন্ত চলে। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, শাখা ছাত্রদলের নেতারা এবং বিএনপিপন্থি কয়েকজন শিক্ষক— গণিত বিভাগের অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দীন, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দীন রুনু এবং সিনেট সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন।

মিটিং সূত্রে জানা যায়, বিদ্রোহী নেতারা সহ-সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ দাবি করেন। তবে শীর্ষ নেতারা তা মানতে রাজি হননি। পরে উপস্থিত বিএনপিপন্থি শিক্ষকেরা আলোচনায় বসলেও কোনো সমাধান আসেনি। ফলে নির্ধারিত দিনে প্যানেল ঘোষণা সম্ভব হয়নি।

এ ছাড়া ছাত্রদলের ভেতরেই অভিযোগ উঠেছে, প্রধান তিনটি পদ নিয়ে বিএনপিপন্থি শিক্ষকেরাও বিভক্ত। তাদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে ওই পদে বসানোর জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে সুপারিশ করেছেন বলেও জানা গেছে।

যদিও উপস্থিত শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তারা শুধু বিভাজনজনিত অস্বস্তির বিষয়টি জানাতে গিয়েছিলেন, কিন্তু প্যানেল নির্ধারণ বা প্রভাব বিস্তারের সঙ্গে জড়িত নন।

ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ নেতারা জানান, প্রায় ৫০ জন বিভিন্ন পদে মনোনয়নপত্র কিনেছেন। এর মধ্যে সহ-সভাপতি পদে ৪ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৫ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ৬ জন প্রার্থী হয়েছেন। ফলে প্যানেল ঘোষণা হলে বিক্ষোভ আরও বাড়তে পারে— এই আশঙ্কায় এখনো ঘোষণা স্থগিত রাখা হয়েছে।

তবে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহিরউদ্দীন মোহাম্মদ বাবর দাবি করেছেন, সংগঠনে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। তিনি বলেন, আমরা সবাই এক গ্রুপের। বড় সংগঠন হওয়ায় একই পদে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন কিনেছেন। মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ আছে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে বাকিদের সরে দাঁড়াতে বলা হবে। প্রতিযোগিতা বেশি থাকায় একটু দেরি হচ্ছে, তবে ২-দিনের মধ্যেই আমরা প্যানেল ঘোষণা করব।”

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments