Thursday, August 28, 2025
spot_imgspot_img
Homeরাজনীতিঢাবি ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুলের প্রধান অঙ্গীকার—আবাসন সংকট নিরসন

ঢাবি ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুলের প্রধান অঙ্গীকার—আবাসন সংকট নিরসন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছাত্রদল মনোনীত প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। তিনি সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আবিদুল বর্তমানে কবি জসীম উদ্‌দীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়।

২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে তিনি অংশ নিলেও ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন। এবারের নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “২০১৯ সালের নির্বাচন ছিল পূর্বপরিকল্পিত ও প্রহসনমূলক। এবার সত্যিকার অর্থে ৩৪ বছর পর পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা এবার ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন, এটাই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন।”

ঢাবির প্রধান সংকট নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আবিদুল বলেন, “একাডেমিক পরিবেশের সংকটই সবচেয়ে বড় সমস্যা। ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিযোগিতা করে আসা শিক্ষার্থীরা যোগ্যতা অনুযায়ী বিকশিত হতে পারেন না। অনেক বিভাগে একসঙ্গে ২৫০-৩০০ শিক্ষার্থীকে পড়ানো হয়, অথচ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে প্রতি শিক্ষকের বিপরীতে ৪০ জন শিক্ষার্থী থাকার কথা। ফলে মানসম্মত শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, অধিকাংশ শিক্ষার্থী মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের। হলে সিট না পেয়ে বাইরে থাকলে তাদের খরচ বেড়ে যায়। টিকে থাকতে গিয়ে তাদের একাধিক টিউশনি করতে হয়, পড়াশোনার জন্য সময় থাকে না। তাই তার প্রথম প্রতিশ্রুতি—আবাসন সংকট নিরসন। প্রয়োজনে টিনের ছাউনি দিয়েও হলেও শিক্ষার্থীদের জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হবে।

নির্বাচিত হলে তার লক্ষ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি ও সিন্ডিকেটের প্রভাব বন্ধে জিরো টলারেন্স থাকবে। আওয়ামী আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় ৬৪ শতাংশ শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন, যোগ্যতাকে উপেক্ষা করে। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থান নেব। আমি এমন একটি একাডেমিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে চাই যেখানে শিক্ষার্থীরা ভয়মুক্তভাবে পড়াশোনা করতে পারবেন।”

এছাড়া কার্জন হল, মোতাহার হোসেন ভবন, মোকাররম ভবনসহ একাধিক স্থাপনার সমস্যা সমাধান এবং ক্যান্টিনের মানোন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। তার মতে, বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আবাসিক ও শিক্ষাকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে হবে।

প্যানেল প্রসঙ্গে আবিদুল বলেন, “আমরা অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী হয়েছি। ডাকসুর ইতিহাসে এটি বিরল ঘটনা। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদল ভূমিধস বিজয় পেয়েছিল। আমি বিশ্বাস করি, ২০২৫ সালেও শিক্ষার্থীরা আমাদের প্রতি আস্থা রাখবেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আনা হচ্ছে, সেগুলো প্রতিহিংসামূলক। প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দিয়ে তাদেরই সুবিধা দিয়েছে।”

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভিপি না হলেও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে লড়াই চালিয়ে যাব। গত ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা বোনাস লাইফ নিয়ে বেঁচে আছি। শহীদ হওয়ার কথা থাকলেও টিকে গেছি। তাই আমাদের সংগ্রাম চলমান থাকবে—বিজয়ী হই বা না হই, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে ছাত্রদল সর্বদা পাশে থাকবে।”

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments