ওমানের রাজধানী মাস্কটে ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর ছয় মাস আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সার্ক পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়টি তোলা হয়, যা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সুপরিচিত অবস্থান। তবে জয়শংকর বৈঠকে জানিয়ে দেন, এ মুহূর্তে সার্ক নিয়ে আলোচনা না করাই ভালো, কারণ এটি ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের আলোকে বিভ্রান্তিমূলক হতে পারে।
ভারত মনে করছে, ঢাকা ও ইসলামাবাদের ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক ঘনিষ্ঠতা তাদের স্বার্থের জন্য অস্বস্তিকর। ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ প্রথমবার পাকিস্তান থেকে সরাসরি ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করে এবং ভিসা সীমাবদ্ধতা শিথিল ও সরাসরি ফ্লাইট চালু করে। এছাড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য পাকিস্তান প্রশিক্ষণ ও বৃত্তি প্রদান শুরু করেছে। সামরিক ও বেসামরিক সফরও বেড়েছে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেন।
ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ঢাকা-ইসলামাবাদের ঘনিষ্ঠতা ভারতের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ তৈরি করছে। সাবেক কূটনীতিবিদ ভিনা সিক্রি এবং সেনাধ্যক্ষ অনিল চৌহানও এই সম্ভাব্য স্থিতিশীলতার প্রভাব নিয়ে সতর্ক করেছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা ভারতের জন্য শুধু সামরিক বা নিরাপত্তাগত প্রশ্ন নয়, আদর্শিক ও চিন্তাভাবনার দিক থেকেও উদ্বেগজনক। পাকিস্তান শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মকে দীক্ষিত করতে চাইছে, যা ভারতের ভাবধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সংক্ষেপে, বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচনের পর পাকিস্তানকে সহায়ক নীতি গ্রহণের সম্ভাবনা এবং আঞ্চলিক কূটনৈতিক সমীকরণ ভারতের স্বার্থের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।