গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, আহত ১৫
গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রম এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়। এ সময় মসজিদের মাইকে ডাকাতির ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসীকে জড়ো করা হয়। খবর শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এসে হামলাকারীদের কয়েকজনকে আটক করে মারধর করেন। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
কীভাবে ঘটনার সূত্রপাত?
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, রাত ৯টার দিকে একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে প্রবেশ করে হামলা চালায়। তারা বাড়ির আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। এ সময় স্থানীয় মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, মন্ত্রীর বাড়িতে ডাকাত পড়েছে। ফলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে এবং হামলাকারীদের কয়েকজনকে ধরে মারধর করে।
গুরুতর আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনকে দ্রুত ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকিদের গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেনাবাহিনী ও পুলিশের হস্তক্ষেপ
ঘটনার পর সেনাবাহিনী ও পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কিছু ছাত্র-জনতা পরিচয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে। হামলার মূল উদ্দেশ্য কী, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল ভিডিও
হামলার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায়, কয়েকজনকে গণপিটুনি দেওয়া হচ্ছে। এসব ভিডিও নিয়ে ইতোমধ্যে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
আহতদের পরিচয়
তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের মধ্যে মো. হিমেল, নাভিল আহাম্মেদ, মো. হাসান, গৌরব, শুভ, ইয়াকুব, অপু, বিশাল, ইমন হোসেন ও জাহিদুল ইসলামের নাম জানা গেছে। তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
ছাত্র আন্দোলনের প্রতিবাদ
হামলার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা তীব্র প্রতিবাদ জানান। শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। এ সময় আন্দোলনের গাজীপুরের নেতা মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘শুক্রবার রাতে খবর পাই, সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রতিহত করতে গেলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। তাদেরকে ছাদে নিয়ে মারধর ও কুপিয়ে জখম করা হয়।’
বিক্ষোভ থেকে শনিবার ‘মার্চ টু গাজীপুর’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। আন্দোলনকারীরা হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।