বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যে ভারতের কোনো ভূমিকা নেই, এমন মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নিজের দায়িত্বে ওই বক্তব্য দিয়েছেন এবং এতে ভারতের কোনো প্রভাব বা অংশগ্রহণ ছিল না।
শুক্রবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দিল্লিতে বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নুরুল ইসলামকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর এই বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এই মন্তব্য করেন। তিনি আরো বলেন, “ভারত বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং সহযোগিতায় আগ্রহী। আমরা সবসময়ই গঠনমূলক এবং ইতিবাচক সম্পর্কের জন্য কাজ করছি।”
রণধীর জয়সওয়াল সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন, “সাম্প্রতিক সময়ের উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকগুলোতে ভারত এই বিষয়টি স্পষ্ট করেছে এবং আশা প্রকাশ করেছে যে, ভবিষ্যতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে।” তবে, তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ভারতের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করছে, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে না।”
তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনা নিজ দায়িত্বে এই বক্তব্য দিয়েছেন। এতে ভারত সরকারের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই এবং ভারতের অবস্থানকে এই বক্তব্যের সঙ্গে এক করে ফেলা বাংলাদেশের স্বার্থের জন্য অনুকূল হবে না।” ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ যখন অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের বিরুদ্ধে এই ধরনের বক্তব্য দেয়, তখন সেটি প্রকৃতপক্ষে সম্পর্কের অবনতি ঘটানোর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
জয়সওয়াল বলেন, “ভারত সবসময়ই বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ পরিস্থিতি অবনতি না ঘটিয়ে সহযোগিতার পথে এগিয়ে যাবে। ভারত বিশ্বাস করে যে, পারস্পরিক ভালো সম্পর্কের জন্য সচেষ্ট থাকা উভয় পক্ষের দায়িত্ব।”
ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, জলসম্পদ, নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক সম্পর্ক অন্তর্ভুক্ত। এই সমস্ত বিষয়গুলোর উন্নয়ন দুই দেশের স্বার্থে উপকারী হবে। তবে, সম্পর্কের মাঝে নেতিবাচক মন্তব্যের কারণে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়তে পারে, যা কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনোভাবে সহায়ক নয়।
এই বিষয়গুলো খেয়াল রেখে, ভারত আশা করে যে, বাংলাদেশ ভবিষ্যতে পারস্পরিক সহযোগিতায় আগ্রহী থাকবে এবং সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার জন্য একযোগভাবে কাজ করবে।